প্রথমে কলকাতায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে শারদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই দার্জিলিংয়ে গিয়ে উত্তরবঙ্গ সফরে থাকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ একান্ত আলোচনা করেন মমতার প্রিয়পাত্র বলে পরিচিত কানন। আর তারপরে ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে ফিরে এলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
দায়িত্ব পেলেন নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান পদে। তাঁর জন্য অপসারণ করা হলো মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুক্রবারই শোভনকে এই নিযুক্তির কথা সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে। এত দিন এই পদ সামলাচ্ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ, দীর্ঘ সময় পর অবশেষে ফের ‘ময়দানে’ ফিরলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। গত ১৫ অক্টোবর, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন দার্জিলিঙের রিচমন্ড হিলে। আর সেই সময়েই পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী। এরপর হঠাৎ খবর আসে, মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠক করছেন শোভন। তবে বৈশাখীর সঙ্গে নয়, একাই মমতার সঙ্গে আলোচনায় বসেন কানন (শোভনকে যে নামে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী)।
স্বাভাবিকভাবেই বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে জল্পনা চরমে ওঠে। বুধবার প্রায় দু’ঘণ্টা কথা হয় মুখ্যমন্ত্রী এবং শোভনের। তবে সেখানেই যে এত বড় পরিকল্পনা নিয়ে মিটিং হচ্ছে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাওয়া যায়নি। বৈঠকে তার ইঙ্গিত না মিললেও, শোভনের পুরোদমে প্রত্যাবর্তন কিছুটা প্রত্যাশিতই। গত কয়েক মাস ধরেই শোভনের এই ‘কামব্যাকে’র বিষয়ে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল রাজনৈতিক মহলে। আর সেই জল্পনাই শেষ পর্যন্ত সত্যি হল। সরকারি পদে ফিরলেন শোভন। আসন্ন ২০২৬ এর নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে শোভন কী ভূমিকা নেন, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। কলকাতার মেয়র হিসেবে কলকাতায় দীর্ঘদিন কাজ করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী এবার তাঁকে উন্নয়নের কাজে লাগাতে চান। এবং সেই কারণেই এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। এইভাবে একটা সরকারি পদ দেওয়ার মধ্য দিয়েই, তৃণমূলে ধীরে ধীরে পুরনো ফর্মে ফেরার সূচনা হল বলে মনে করা হচ্ছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেও কয়েকদিনের মধ্যেই বিজেপিতে মোহভঙ্গ হয়ে ফিরে এসেছিলেন বিজেপি থেকে। জল্পনা চলছিল যে, দীপাবলির আগেই, তিনি তৃণমূলে ফিরবেন। এবং সেই জল্পনাই সত্যি হল। কার্যত দীপাবলির আগেই সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হল।














