সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে রাজ্যের উন্নয়নের চালচিত্র পেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকালে সামাজিক মাধ্যমে এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি দাবি করেন, গত ১৫ বছরে বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য তাঁর সরকার অভূতপূর্ব কাজ করেছে। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই দপ্তরের বাজেট ১০ গুণেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
পরিসংখ্যান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়েছেন, ২০১০-১১ অর্থবর্ষে যেখানে এই খাতের বরাদ্দ ছিল ৪৭২ কোটি টাকা, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬০২ কোটি টাকারও বেশি। রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক একটি বড় ফ্যাক্টর হলেও মুখ্যমন্ত্রী এদিন উন্নয়নের খতিয়ান দিতে গিয়ে সরকারি প্রকল্পের সাফল্যের ওপরই বেশি জোর দিয়েছেন।
তিনি সাফ জানান, সংখ্যালঘু স্কলারশিপের ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। রাজ্য সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে চালু হওয়া ‘ঐক্যশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪ কোটি ৮৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে প্রায় ১০ হাজার ২০৮ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পড়ুয়াদের জন্য ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষাঋণের ব্যবস্থাও করেছে নবান্ন। বিগত দেড় দশকে প্রায় ৪০ হাজার পড়ুয়া এই সুবিধা পেয়েছেন, যার মোট অঙ্ক ৩২৭ কোটি টাকা। কেবল পড়ুয়াদের পড়াশোনা নয়, কর্মসংস্থান ও পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকটিও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর লেখায় গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেছেন।
তিনি জানান, সংখ্যালঘু যুবক-যুবতী এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের স্বনির্ভর করতে ১৬ লক্ষ ৩১ হাজার উপভোক্তাকে ৩ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এমএসডিপি প্রকল্পের অধীনে সংখ্যালঘু প্রধান এলাকাগুলিতে প্রায় ২ লক্ষ পরিকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে, যার জন্য ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি। দুস্থ মহিলাদের গৃহনির্মাণের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে অনুদান মঞ্জুর করছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করতে রাজ্যের ১৪টি জেলায় ইংরেজি মাধ্যম মডেল মাদ্রাসা এবং ৩৮টি ইন্টিগ্রেটেড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল তৈরির কাজও জোরকদমে চলছে।
এছাড়া সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদ, হস্টেল এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠনের মতো একাধিক প্রশাসনিক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। বিরোধীরা যখন বিভিন্ন সময়ে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ তোলে, তখন মুখ্যমন্ত্রী এই বিপুল খরচের খতিয়ান দিয়ে উন্নয়নের উন্নয়নকেই হাতিয়ার করলেন। তাঁর মতে, গত ১৫ বছরের এই ধারাবাহিক প্রচেষ্টা বাংলার সংখ্যালঘু সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভিতকে মজবুত করেছে।














