Facebook
Twitter
LinkedIn
Threads
X
Email
WhatsApp
Telegram
StumbleUpon
Pinterest
Skype
Pocket

আক্রমণাত্মক শমীক ভট্টাচার্য

আক্রমণাত্মক শমীক ভট্টাচার্য

জাতীয় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে নিয়ে আগের করা বক্তব্যে অনড় রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। শনিবার সন্ধ্যায় আসানসোলের জিটি রোডের গীর্জা মোড়ে দলের আসানসোল সাংগঠনিক জেলার ডাকে হওয়া ‘পরিবর্তন সংকল্প সভা’য় যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নিজের অবস্থান আবারও স্পষ্ট করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে আমি কোন উদ্বেগ প্রকাশ করিনি। আমি যেটা প্রকাশ্য বলেছি ও বিজেপি প্রকাশ্য বলছে, এসআইআর চলছে। এটি একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব এটা।

 

বিএলওরা দিকে দিকে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিএলওদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত অফিসে ও ক্লাব ঘরে তুলে নিয়ে গিয়ে পার্টি অফিসে রেখে, বিএলওদের ঘেরাও করে, স্বামীদের আক্রমণ করে, কোন কোন ক্ষেত্রে গান পয়েন্টে রেখে ফলস্ স্টেটমেন্ট আপলোড করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বিএলওদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।

 

এদিন শুনেছি ১২ জন অফিসারকে পাঠানো হয়েছে। দিল্লিতে বসে থাকলে হবে না। আমরা দাবি করছি জ্ঞানেশ কুমারকে কলকাতায় আসতে হবে। কারণ সারা ভারতবর্ষের রাজনীতির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। এখানে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে ২৭ দিনে ৫৬ কর্মী খুন হয়েছিলেন। বিহারে, হরিয়ানা, দিল্লিতে নির্বাচন দেখলেন। কোন কিছু হয়নি। বিরোধীদের কোন অভিযোগ নেই। রিগিং নেই। কোন গণধর্ষণ নেই। ঐসব রাজ্যের মানুষ হয় পরিবর্তন করেছেন, বা ক্ষমতায় রেখেছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা ১৩ লক ২৫ হাজার ভোটারের নাম তালিকা সহ নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছে। আমাদের কর্মীরা কাজ করছেন। তারা আরো কিছু নাম আমরা পাবো। ৯ ডিসেম্বর ড্রাফট ভোটার তালিকা বেরোবে। তখন আপনারা হিসেবনিকেশ করবেন। আমি কখনো কোন সংখ্যার কথা বলিনি।

 

আমার কাছে কোন টিয়া পাখি নেই। তবে আপনাদের কাছে একটা কথা স্পষ্ট করে বলছি, আজকে যদি এসআইআর বন্ধ করে দেন। ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স সহ কটা দপ্তরে তালা লাগিয়ে দেন, ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় যদি নির্বাচন করেন, তাহলেও তৃতীয় হারবে। ২০২৬ সালের বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে, ভারতীয় জনতা পার্টি ইতিমধ্যেই বাংলায় জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ময়দানে নেমে প্রচার শুরু করেছে। বিজেপি তার সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য বাংলার প্রতিটি জেলায় নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পরিবর্তন সংকল্প যাত্রা ও সভার আয়োজন করা হচ্চে।

 

সেই মতো এদিন আসানসোলেও এই পরিবর্তন সংকল্প সভার আয়োজন করা হয়েছিলো। আসানসোলের জিটি রোডের গীর্জা মোড়ে হওয়া এই সভায় মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমিক ভট্টাচার্য। তিনি মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, এদিন আসানসোলের সমাজসেবী কৃষ্ণা প্রসাদ, আইনজীবী আনন্দ গোপাল মুখোপাধ্যায় এবং বারাবনির সুজিত মণ্ডলের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যায় মানুষ বিজেপিতে যোগদান করেছেন। তিনি এসআইআর এসআইআর নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বা টিএমসির সমালোচনাও করেন। তিনি বলেন, প্রায়শই দেখা যায় যে ভোটদানের সময় কারও মৃত মা বা বাবা ভোট দিতে আসেন।

 

এটি এমন একটি জাদু যা কেবল মাত্র বাংলায় নির্বাচনের সময় দেখা যায়। এই সমস্ত অনিয়ম বন্ধ করার জন্য এসআইআর করা হচ্ছে। এর সাথে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের উদ্দেশ্যে একটি বার্তাও দেন। তিনি বলেন, বাংলার রাজনীতিকে সমগ্র দেশের রাজনীতির সাথে এক করে দেখা যায় না। বাংলায় এক ভিন্ন ধরণের রাজনীতি চলছে। এখানে এসআইআর চলছে। তবে তিনি অভিযোগ করেন যে স্থানীয় বিএলওদের উপর টিএমসি চাপ দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, কিছু ক্ষেত্রে বন্দুকের মুখে বিএলওদের ভুল তথ্য আপলোড করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাই জ্ঞানেশ কুমারকে বাংলায় এসে দেখতে হবে এই প্রক্রিয়াটি কিভাবে চলছে। কিভাবে এখানে সবাই কাজ তিনি বলেন, তৃণমূল নেতারা বিজেপি সম্পর্কে যা বলছেন, তার সাথে তার কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, বাংলার মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের উপর বিরক্ত। তারা এখন পরিত্রাণ চাইছেন।

 

তাই আসন্ন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত। তৃণমূলের বিসর্জন হবেই। দেওয়াল লিখন হয়ে গেছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। এদিনের সভায় বিজেপি নেতা ও কর্মী উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য মঞ্চে পৌঁছালে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপরে, আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখেন। রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, এখন পশ্চিম বর্ধমান জেলার, বিশেষ করে আসানসোলের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। তিনি বলেন, আজ আসানসোল জেলা হাসপাতালের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে কোনও রোগীকে সেখানে চিকিৎসা করা হয় না। যে কোনও রোগীকে চিকিৎসার জন্য সেখানে রেফার করা হয়, কিন্তু প্রশাসন তাদের কোনও মনোযোগ দেয় না।

 

আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালও তৃণমূল কংগ্রেসের উপর তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমগ্র দেশের সাথে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন করতে চান। কিন্তু এখানকার সরকার কেবল নির্বাচনী রাজনীতি বোঝে। তিনি বলেন, দরিদ্ররা আবাসন প্রকল্পের আওতায় ঘর পায় না, অন্যদিকে তৃণমূল কর্মীরা দোতলা বা তিনতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাসন প্রকল্পের আওতায় ঘর পান। তিনি বলেন, বাংলাকে বাঁচাতে হলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।
এদিনের সভায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন কুলটির বিধায়ক ডাঃ অজয় পোদ্দার, প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি, পবন সিং সহ জেলার নেতারা।

READ MORE.....