এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২’র ম্যাচে কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মুখোমুখি হয়েছিল তুর্কমেনিস্তানের ফুটবল দল আহাল এফকে এবং ভারতের মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট।ধারে,ভারে সবদিক থেকে খাতায় কলমে মোহনবাগান অনেকটাই এগিয়ে ছিল। টিম বাজেটের দিক থেকেও মোহনবাগানের ধারে কাছে নেই আহাল। মোহনবাগান যেখানে ৭০ কোটির দল সেখানে মাত্র ৩ কোটির দল আহাল।তারাই কিনা যুবভারতীতে এসে মোহনবাগানকে হারিয়ে দিয়ে চলে গেল! যা শুধু বিস্ময় নয় সাংবাদিকদের কাছে,মাঠে উপস্থিত ৪১,০০৩ জন দর্শক ও হয়ত ম্যাচ শেষে এই স্কোর লাইনে বেশ অবাকই হবে।ম্যাচে ১-০ গোলে পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছে সবুজ মেরুন ব্রিগেডকে। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে গোল হজম করেছে তারা। তবে ম্যাচ জেতার কিন্তু বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল মোহনবাগান। সাহার,কামিন্সদের গোল করতে না পারার ব্যর্থতার কারণে তাদের ভুগতে হয়েছে।
ম্যাচ এদিন আক্রমণ,প্রতি আক্রমণে মাঝে মাঝে জমে উঠলেও সেই জমাটি ভাবটা যেন ছিল না। প্রাথমিকভাবে কিছুটা চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে আহাল এফকেও। বাশিমভ হাকমুহাম্মেতদের দেখে মনে হচ্ছিল তারা যেন এই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট বের করে নেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই ম্যাচে নেমেছে।জোসে মোলিনার ছেলেদের প্রি সিজন অনুশীলনের অভাব ম্যাচে অনুভূত হয়েছে। রবসনকে দেখে এখন ও ১০০ শতাংশ ম্যাচ ফিট বলে মনে হয়নি। খেলার ১৩ মিনিটে, কর্নার পেয়েছিল মোহনবাগান। তবে লিস্টনের নেওয়া সেই কর্নার থেকে বিপদ কিছু ঘটেনি।খেলার ২৪ মিনিটে ফের কর্নার পায় আহাল।তবে গোল করতে পারেনি তারা।এদিন মোহনবাগানের ডিফেন্স সামলানোর দায়িত্ব পড়ে টম অ্যালড্রেড, আলবার্তো রদ্রিগেজ, অভিষেক সিং টেকচাম এবং আশিস রাইয়ের উপর। অভিষেকের দিক থেকে এদিন আহালের বেশ কিছু আক্রমণ উঠে এসেছে। মাঝেমধ্যে তাঁকে গতিতে পরাস্ত হয়ে দেখা গিয়েছে।রবসন রবিনহোকে এদিন প্রথম একাদশে রাখেননি মোহনবাগান কোচ। তাঁকে পরবর্তীতে পরিবর্ত হিসেবে নামান তিনি।তবে ম্যাচে সেরকম প্রভাব তিনি বিস্তার করতে পারেননি।
খেলার ৩২ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে আক্রমণ করে আহাল এফকে। মিরজোয়েভ সুলেমানের শট বারপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে, জেসন কামিংসের শট গোলপোস্টের উপর দিয়ে উড়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। ৪৫ মিনিটে, টোবাকেলভ নাজারের দূরপাল্লার শট সেভ করেন বিশাল কেইথ।ফলে শেষপর্যন্ত, প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থাতেই।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে বেরেনভের শট সেভ করেন বিশাল। এরপর দলে দুটি পরিবর্তন আনেন মলিনা। কিয়ানের বদলে জেমি ম্যাকলারেন এবং দীপক টাংরির বদলে অনিরুদ্ধ থাপা নামান।অপরদিকে, আহাল এফকে কোচ আন্নামুহাম্মেদভ এজিজ একটি পরিবর্তন করেন। গুরবানের পরিবর্তে মাঠে আসেন দোভরান খেলার ৬৭ মিনিটে, ফের একবার জেসন কামিংসের শট একটুর জন্য বাইরে চলে যায়।কয়েকমিনিট বাদে, অনিরুদ্ধ থাপার পাস থেকে জেসন কামিংসের মাইনাস যায় জেমি ম্যাকলারেনের কাছে। তাঁর শট আটকে দেন আহাল এফকের গোলরক্ষক কাকাগেলডি।এরপর মাঠে লিস্টের পরিবর্তে নামানো হয় রবসন রবিনহোকে। অভিষেকের জায়গায় মাঠে আসেন শুভাশিস বোস।ম্যাচের ৮২ মিনিটে সাহাল আবদুল সামাদ গোলের একটি সুযোগ নষ্ট করেন। আর তারপরেই অঘটন। খেলার ৮৩ মিনিটে, আন্নাইয়েভ এনভারের গোলে ম্যাচে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আহাল এফকে। এরপর আর গোল হয়নি। ফলে ওই ব্যবধানেই ম্যাচ হেরে যায় মোহনবাগান দল।