নির্দেশ দিয়েছিলাম পরীক্ষা যাতে স্বচ্ছ, ত্রুটিমুক্ত হয়। এর জন্য একাধিক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। যাতে পরীক্ষার্থীদের কাছেও সবটা পরিষ্কার থাকে। এভাবেই রবিবার পরীক্ষা শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসএসসিকে ধন্যবাদ জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। দুই দফায় শেষ হলো বহু প্রতীক্ষিত এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা। স্বচ্ছতার সঙ্গে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, এমনটাই দাবি করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানিয়েছেন, মোট আবেদনকারীর ৯৩ শতাংশই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
রবিবার পরীক্ষা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দু’বছর ধরে নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে দিয়ে এই পরীক্ষা নেওয়াটা খুবই কঠিন ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরন্তর সহযোগিতা এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পরীক্ষাটি স্বচ্ছ ও মেধার ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সফল আয়োজনের জন্য তিনি রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিক এবং মুখ্যসচিব-সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদন করেছিলেন ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৬১ জন, যার মধ্যে পরীক্ষা দেন ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ১৫২ জন (৯১.৬২ শতাংশ)। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫৪৩ জন, যার মধ্যে ৯৩ শতাংশ পরীক্ষার্থীই পরীক্ষায় বসেছেন। এই দুই পরীক্ষা মিলিয়ে মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৫ লক্ষ ৬৬ হাজার।
নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত করার জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। ব্রাত্য বসু জানান, এই প্রথমবার এসএসসি ওএমআর ভিত্তিক লিখিত পরীক্ষা পরিচালনা করেছে এবং পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্রের প্রতিলিপি সঙ্গে নিয়ে যেতে পেরেছেন। এছাড়াও, লিখিত পরীক্ষার পর প্রশ্নপত্রের মডেল উত্তরপত্র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে এবং পরীক্ষার্থীদের মতামত বা আপত্তি জানানোর সুযোগ থাকবে।
পরবর্তী ধাপে, পার্সোনালিটি টেস্ট বা ইন্টারভিউয়ের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য এবং প্রাথমিক তালিকা নম্বর-সহ কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এই পদক্ষেপগুলি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করবে বলে শিক্ষামন্ত্রী আশাবাদী।
এবারের পরীক্ষায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল এবং প্রশ্নপত্রও তুলনামূলক সহজ ছিল বলে অনেক পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন। যদিও অনেকেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে এখনও সন্দিহান, কিন্তু ব্রাত্য বসু বারবারই জোর দিয়েছেন যে সমস্ত তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে, যা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
এরপরই নাম না করে আক্রমণ করেন বিজেপিকে। ডবল ইঞ্জিন সরকার নিয়ে গালভরা যেসব মন্তব্য শোনা যায়, তা আদতে কতোটা ঠিক বা বাস্তব তা পরখ করে নিতে বলেন তথ্য দিয়ে। কীভাবে ডবল ইঞ্জিন সরকার নিয়ে বড় বড় কথা বলেন নেতারা, প্রশ্ন তুলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকারের সাফল্য বা ব্যর্থতা আসলে কতোটা, এই তথ্য থেকে আপনারা তার হিসাব পাবেন।
বাংলা বরাবর সকলকে আপন করে নিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও বিভাজন করেন না। আমাদের রাজনৈতিক দলের লোকেরাও লাঠি নিয়ে তেড়ে যায়নি। তুমি অধম তাই বলে আমি উত্তম হইব না কেন! কোনও দিন পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কোনও বিতর্ক ছিল না। বিজেপি শাসিত রাজ্যে কেন গালাগাল দেওয়া হচ্ছে জানি না। বাইরে থেকে আসলে আমরা চেষ্টা করব, তাঁরা যাতে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে।