কখনও রাস্তায়, কখনও ধানখেতে, কখনও একলা আবার কখনও দলবেঁধে গোটা উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চল লাগোয়া লোকালয়ে বেরিয়ে পড়ছে হাতি। এতে বনকর্মীরা এমনিতেই মাথা ঠিক রাখতে পারছেন না। তার ওপর স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে পর্যটকদের পড়িমরি করে ছবি তোলার প্রবণতা দিনকে দিন বেড়ে চলায় বিপদ আরও বাড়ছে। বারবার সাধারণকে সচেতন করেও মিলছে না সুফল। বাধ্য হয়ে এবার কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে বন দপ্তর। হাতিদের সামনে গিয়ে ছবি তুললে গ্রেপ্তার পর্যন্ত করা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ বন্যপ্রাণ বিভাগের বনপাল ভাস্কর জেভির মন্তব্য, ‘পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন রিসর্টে বনকর্মীরা যাচ্ছেন। হাতিরা লোকালয়ে বেরিয়ে পড়লে যেন তাদের কাছে হুট করে পর্যটকরা চলে না যান, সেজন্য সচেতন করা হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে গেলে প্রয়োজনে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার পর্যন্ত করা হতে পারে।’
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বনাঞ্চল লাগোয়া লোকালয়ে বছরের এই সময় বেড়েছে হাতির আগমন। বিশেষ করে জলপাইগুড়ি জেলার লাটাগুড়ি ও গরুমারা, চাপড়ামারি, কাঠামবাড়ি সহ বিভিন্ন জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তায় উঠে পড়ছে হাতির পাল। আর খবর পেয়েই তাদের দিকে ছুটে যাচ্ছেন কিছু মানুষ, ফোটো তোলার নেশায়। কেউ কেউ আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় রিল তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। বিষয়টি যে কতটা বিপজ্জনক, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না।
বন দপ্তরের লাটাগুড়ি রেঞ্জ সূত্রে খবর, এমন কোনওদিন নেই, জঙ্গল থেকে হাতি বের হওয়ার খবর আসছে না। আর শীত পড়তেই ডুয়ার্সজুড়ে বেড়েছে পর্যটকদের আগমন। সেটা আরও বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বন দপ্তরের কাছে। লাটাগুড়ির পরিবেশপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার বলেন, ‘কোনওকিছু না বুঝেই পর্যটকরা হাতির কাছে চলে যাচ্ছেন। ফোটো তুলছেন। হাতি আক্রমণ করে বসলে প্রাণ বঁাচানো মুশকিল হয়ে যাবে।’ আপালচাঁদ বনবস্তির কৃষক সঞ্জিত সরকার জানাচ্ছেন, শুক্রবার গ্রামে হাতি প্রবেশ করেছিল। সাতসকালে হাতির খবর জানাজানি হতে বহু মানুষ ক্যামেরা, মোবাইল ফোন হাতে ভিড় জমান। একসময় হাতিটি মানুষের দিকে তেড়ে যায়।
সমস্যা সমাধানে সচেতনতা প্রচার শুরু করেছে বন দপ্তর। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। বন দপ্তরের লাটাগুড়ি রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দত্ত বলেন, বারবার সতর্ক করার পরও যদি কেউ সতর্ক না হন তাহলে তাঁদের আটক করা হতে পারে।














