হানিমুন পিরিয়ড ইজ ওভার। বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে ২০১১ সালের ক্ষমতায় আসার কিছুদিনের মধ্যেই সম্পর্ক ছেদ হওয়ার পর থেকে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের যে গলায় গলায় বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল তাতে ছন্দপতন শুরু হল। ছন্দ কাটতে শুরু করেছিল কয়েকদিন আগে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদে শুভঙ্কর সরকার আসার পর থেকেই। তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত ছিল কিনা তা নিয়ে আরো ভাবনা চিন্তা করা উচিত ছিল বলে কয়েকদিন আগেই প্রকাশ্যে আক্ষেপ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শুভঙ্কর। এবারে বাংলায় সিপিএমের ২৭তম রাজ্য সম্মেলনের খসড়া প্রস্তাবে যেভাবে বিজেপি ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রসঙ্গে নরম মনোভাব প্রকাশ করা হয়েছে সিপিএমের পক্ষ থেকে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
বছর ঘুরলেই যেখানে বাংলায় ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন, ঠিক সেই সময় সিপিএমের প্রতি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এই মনোভাবে দুই দলের মধ্যে আসন সংখ্যা কতখানি সম্ভব-তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিল। শনিবার বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস সদস্যদের নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মীর, প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী, প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উঠে আসে সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘপ্রধান মোহন ভাগবতের দীর্ঘতম বাংলা সফর এবং সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের খসড়া প্রস্তাবে বিজেপিকে ফ্যাসিস্ট না বলার প্রসঙ্গ।
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সাম্প্রতিক পশ্চিমবঙ্গ সফর সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শনিবার তিনি বলেন, সম্প্রতি যে পার্টির (সিপিএমের) পেপার বেরিয়েছে তা পড়ে দেখবেন, তাতে ফ্যাসিস্ট শব্দটি বাদ রাখা হয়েছে। আমরা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাদের এনে কোথাও কোনও সভা করিনি। আজ তৃণমূল যে রাজনৈতিক দোষে দুষ্ট, সেই একই রাজনৈতিক দোষে দূষ্ট অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও। এই হিম্মত কোনও রাজনৈতিক দলের নেই। তাঁর সংযোজন, আমরা কেউ বিজেপিকে কোনও সময় ফ্যাসিস্ট বলি, কেউ বর্বর বলি। আবার কখনও কেউ তাকে সেই বন্ধনী থেকে বাইরে রাখি। কিন্তু কংগ্রেসের মতাদর্শ, কংগ্রেসের আদর্শ নিয়ে রাহুল গান্ধী প্রত্যেক দিন লড়াই করছেন। মল্লিকার্জুন খাড়্গে লড়ছেন। এরপর সরাসরি সিপিএমের নাম না করে তীব্র কটাক্ষ করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, মতাদর্শের লড়াইয়ে কংগ্রেস ছাড়া আর কোনও রাজনৈতিক দল আরএসএসের বিরুদ্ধে লড়াই করে না। তারা যদি লড়াই করত, তবে এ ভাবে ময়দান ছেড়ে দিত না।