৪৫ হাজার ভক্তদের প্রসাদ বিতরণের মধ্যে দিয়ে শ্রীপাদ ঈশ্বর মাধবেন্দপুরী পাদের তিরোধান উৎসব, শান্তিপুরের অদ্বৈত প্রাঙ্গনে। শান্তিপুরের ঐতিহাসিক তীর্থস্থান অদ্বৈত প্রাঙ্গণে অদ্বৈত আচার্যের গুরুদেব শ্রীপাদ ঈশ্বর মাধবেন্দ্র পুরিপাদের তিরোধান উৎসবে হাজার হাজার দেশী-বিদেশি ভক্তদের সমাগম। হাজার হাজার ভক্তরা মেতে ওঠেন হরিনাম সংকীর্তনে, যেখানে বিদেশি ভক্তরাও অংশগ্রহণ করছেন। উল্লেখ্য, ঈশ্বর পুরিপাদ ছিলেন শ্রীমৎ মাধবেন্দ্রপুরী মহারাজের প্রথম শিষ্য এবং শ্রীচৈতন্যদেবের পরম গুরু।
প্রতিবছরের মতো এবছরও এই উৎসব নদীয়ার শান্তিপুরের বাবলা অদ্বৈত পাঠ অঙ্গনে উদযাপিত হয়। এই বিশেষ স্মৃতিতে উৎসব প্রথম শুরু করেছিলেন অদ্বৈত আচার্য। ভাগবত অনুসারে, এই বিশেষ দিনে অদ্বৈত পাঠে বসে প্রসাদ গ্রহণ করলে গোবিন্দ প্রেমে আবদ্ধ হওয়া যায়। নদীয়ার ইসকন মায়াপুর ও অদ্বৈত পাঠ যৌথভাবে সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করে এবং সেখানে অসংখ্য ভক্ত এবং বিদেশি পর্যটক উপস্থিত হয়। এই উৎসবে প্রায় ৪৫ হাজার ভক্তের জন্য প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সকাল থেকে শুরু হওয়া প্রসাদ বিতরণ চলে রাত পর্যন্ত। এছাড়া, অদ্বৈত আচার্য এবং ঈশ্বর পুরিপাদের বিশেষ পূজা, আরতি ও ভাগবত পাঠও অনুষ্ঠিত হয়। এদিনের মহৎ উৎসবে আগত ভক্তবৃন্দদের সাথে সময় কাটান শান্তিপুরের ঐতিহ্যমন্ডিত বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী বাড়ির বংশধর তথা শান্তিপুর বিধানসভার বিধায়ক ডঃ ব্রজ কিশোর গোস্বামী। তিনি বলেন, এই উৎসবের জন্য আলাদা করে প্রচার করা হয় না। দোল উৎসবের আগে গোবিন্দ দ্বাদশী তিথিতেই প্রত্যেক বছর এই অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। স্বভাবতই ঐতিহাসিক এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অদ্বৈত পাঠ প্রাঙ্গণের পাশে দোকানিরা মেলা সামগ্রি জিনিসপত্র নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেন। হাজার হাজার মানুষের ঢল সামাল দিতে থাকে পুলিশের নিরাপত্তা বলয়। উল্লেখযোগ্য বিষয়, রাশিয়া, আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশের বিদেশী ভক্তরা আগত ভক্তবৃন্দদের সাথে মিলেমিশে গিয়ে মহাপ্রসাদের সাধ উপভোগ করে নেন, যা এই উৎসবের এক অন্যতম নিদর্শন।