আপনারও কি বারবার মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করে? অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া কেবল রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে না বরং দাঁতের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করতে পারে। মিষ্টি এবং মিষ্টান্নের প্রতি অতিরিক্ত আকাঙ্ক্ষা স্বাভাবিক নয়, এটি অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে। মিষ্টির প্রতি অতিরিক্ত আকাঙ্ক্ষা শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার কারণে হতে পারে।
রক্তে শর্করা
শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রার ভারসাম্যহীনতা থাকলে মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা হতে পারে। এটি ঘটে যখন রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায় (হাইপোগ্লাইসেমিয়া), যার ফলে শরীরে শক্তির প্রয়োজন হয়। মিষ্টি খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি আসে কারণ চিনি সরাসরি রক্তে শোষিত হয়। একইভাবে, ডায়াবেটিসেও, শরীর রক্তে শর্করার মাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এর ফলে তৃষ্ণার সৃষ্টি হয় কারণ শরীরের কোষগুলি শক্তি পেতে অসুবিধা বোধ করে। যদি আপনার ক্রমাগত মিষ্টির প্রতি আকাঙ্ক্ষা থাকে, তাহলে আপনার রক্তের মাত্রা পরীক্ষা করে নিন।
মানসিক চাপ বা উদ্বেগ
মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের সময় শরীরে কর্টিসলের (স্ট্রেস হরমোন) মাত্রা বেড়ে যায়। এই হরমোন বেশি খাওয়ার ইচ্ছা বাড়ায়, বিশেষ করে মিষ্টি খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা। মিষ্টি খেলে মস্তিষ্কে ডোপামিন এবং সেরোটোনিনের মতো “হ্যাপি হরমোন”-এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা তাৎক্ষণিক স্বস্তি প্রদান করে। তাই মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান, যোগব্যায়াম, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম প্রয়োজন।
ঘুমের অভাব
যদি আপনি পর্যাপ্ত ঘুম না পান, তাহলে আপনার শরীর শক্তির জন্য মিষ্টি খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। ঘুমের অভাব শরীরে লেপটিন (যা ক্ষুধা কমায়) এবং ঘ্রেলিন (যা ক্ষুধা বাড়ায়) এর ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে। এই কারণে, শরীর আরও বেশি খেতে আগ্রহী হয়।
ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের অভাব
কখনও কখনও শরীরে কিছু ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের ঘাটতি হতে পারে, যা মিষ্টি খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বাড়িয়ে দেয়। ক্রোমিয়াম একটি খনিজ যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর অভাবের কারণে মিষ্টি খাওয়ার প্রতি আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পেতে পারে। একই সাথে, ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি শরীরকে মিষ্টি খেতে আগ্রহী করে তোলে, কারণ এটি শরীরে শক্তি এবং সতেজতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।