সম্প্রতি রাজ্যে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন। তবে পরবর্তী সুপ্রিম নির্দেশে যোগ্যদের শিক্ষাদানের বিষয়ে বলা হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তাঁর মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সমাপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে এসএসসি-কে। সদর হাওড়া ও গ্ৰামীণ হাওড়ার প্রায় সব বিধানসভা এলাকার অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরি হারিয়েছেন। এর মধ্যে গ্ৰামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমার শ্যামপুর এলাকা থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরি হারিয়েছেন। যদিও এই বিষয়টি কেউই প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, বে-আইনি ভাবে সুদের কারবারের বাড় বাড়ন্ত হয়েছে শ্যমপুরে চাকরিহারা কান্ডের জেরে। সেটা কিভাবে? জানা যাচ্ছে, কয়েক বছর আগে বেশ কিছু যুবক-যুবতী চাকরি পাওয়ার আশায় সুদের কারবারিদের কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়ে ছিল। মাসিক সর্বাধিক দশ শতাংশ হারে টাকা ঋণ নিয়ে ছিল। যা দেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মানুষের হাতে।
যদিও বর্তমানে সেই মানুষগুলির নাম প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা, বা তাদের আত্নীয় স্বজনেরা। অন্যদিকে চাকরি চলাকালীন এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেই মাসিক কিস্তির ভিত্তিতে গাড়ি-বাড়ি করেছেন। তার ইএমআই স্বাভাবিকভাবে দিতে হবে। আর এখানেই শ্যামপুরের চড়া সুদের কারবারিদের পৌষ মাস। এই অবস্থায় চাকরি হারিয়ে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাদের কাছে চাকরি পাওয়ার আশায় মোটা টাকা দিয়েছিল, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এখন টাকা ফেরত চাইছেন। সামাজিক সম্মান, প্রভাব, প্রতিপত্তিত্ব বজায় রাখার জন্য প্রভাবশালী ঐ ব্যক্তিরা চড়া সুদের কারবারিদের দুয়ারে দারস্থ হচ্ছেন।
শ্যামপুর এলাকায় পরিচয় গোপন করে যোগাযোগ করে জানা গেছে, চাকরি পাওয়ার জন্য যেমন চড়া সুদে টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে চাকরি হারাদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চড়া সুদের কারবারিদের কাছ থেকে টাকা ঋণ নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনা গোটা শ্যামপুর এলাকা জুড়ে চলছে। শুধুমাত্র নামগুলি যেন প্রকাশ্যে না আসে। সামাজিক সম্মান, প্রভাব, প্রতিপত্তিত্ব বাঁচানোর জন্য এখন এই পন্থা অবলম্বন করছে বেশ কয়েক জন এজেন্ট। শ্যামপুর শহর এলাকায় ডিহি মন্ডল ঘাট এলাকার সুদের কারবারিদের কাছ থেকেই মূলত এই টাকা লেনদেন হয়েছে। চাকরিহারা কান্ডের জেরে তাই উভয় পক্ষের সুদ পেয়ে ফুলে-ফেঁপে উঠছে শ্যামপুরের সুদের কারবারিরা।