যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে ঝামেলা করবেন না, ভরসা রাখুন। মঙ্গলবার মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুল মাঠের প্রশাসনিক সভা মঞ্চ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কলকাতায় থাকলে সমস্যা মিটিয়ে দিতাম। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা চাকরি দেবো আর ওরা চাকরি খাবে। যারা চাকরি খেয়েছে তাদের ওপর ভরসা করবেন না। আমি চাই না রাজ্যে বেকার বাড়ুক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হবে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। চাকরি হারাদের কাছে ফের কাজে যোগদানের আবেদন করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা ভুল বোঝাচ্ছে তাদের কথা শুনবেন না। গ্রুপ সি-ডি নিয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। আপনারা কেন রাস্তায় বসে আছেন? তাঁর প্রশ্ন, শিক্ষকরা কেন অবস্থানে বসে আছেন? আপনারা মাইনে পাবেন। আমাদের আইনজীবীদের পরামর্শ নিন। সোমবার থেকেই যোগ্য তালিকা প্রকাশের দাবিতে এসএসসির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছেন চাকরিহারা ব্যক্তিরা।
যতক্ষণ না তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে, ততক্ষণ তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না বলেই জানিয়ে দিয়েছেন। আর এই পরিস্থিতিতে কলকাতার বাইরে থাকলেও মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে বড় বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, এদিন মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে চাকরি হারাদের বিক্ষোভ নিয়ে বড় মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আমি থাকলে এক সেকেন্ডে মিটিয়ে দিতাম। আমি মেদিনীপুরে ছিলাম। রাত পর্যন্ত কথা বলেছি। ঠিকমত বেতন পাচ্ছেন কিনা, সেটা দেখা দরকার। বাকিটা আমাদের ওপর ছেড়ে দিন। স্কুলে গিয়ে ক্লাস নিন শিক্ষকরা। সরকার তাঁদের বেতন দেবে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন, তাঁদের অনেকে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাঁরা বেতন দেবে না। পাশাপাশি নাম না করে কয়েকজনকে কটাক্ষও করেছেন তিনি।
বলেছেন, বাংলায় কয়েকটা লোক আছে। তাঁরা শিক্ষকদের চাকরি খায়। তাঁর নিশানায় যে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সোমবার হাজার-হাজার চাকরিহারারা জড়ো হয়েছিলেন সল্টলেকের এসএসসি ভবনের সামনে। সময় যত এগিয়েছে, চাকরিহারাদের উপস্থিতির সংখ্যা তত বেড়েছে। সকাল থেকেই এসএসসি ভবনকে ঘিরে দুর্গ তৈরি করে বিধাননগর কমিশনারেট। কিন্তু সন্ধ্যেয় চাকরহারারা ধৈর্যহারা হয়ে উঠলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খায় পুলিশ।
পুলিশের সামনে কেউ হাততালি দিয়ে, কেউ ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে কেউ বা স্লোগানের মাধ্যেমে হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। সূর্যের তাপ যত বেড়েছে, আন্দোলনের ঝাঁঝও তত বৃদ্ধি পেয়েছে। মেদিনীপুরে থাকলেও সমস্ত দিকের ওপরেই খোঁজ খবর রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মেদিনীপুরের প্রশাসনিক সভা মঞ্চ থেকেই তিনি বলেছেন, সোমবার থেকে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০ বার কথা বলেছেন। কেউ কেউ অনড় রয়েছেন যে, ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্যদের’ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। কে যোগ্য আর কে অযোগ্য তা দেখার জন্য রাজ্য সরকার আছে, কোর্ট আছে। নিজের চাকরি আছে কিনা সেটা দেখুন।