বহরমপুর শহরে এবার ছোট্ট একটা লাইব্রেরি, তাও আবার রাস্তার উপরেই। ডিজিটাল যুগে এখন মোবাইল এবং ইন্টারনেট মানুষের বেশিরভাগ সময় দখল করে নিচ্ছে। যুব সমাজের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ দিন দিন কমছে বলেও দাবি শিক্ষক মহলের একাংশের। এখন শহর বা গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ লাইব্রেরি গুলিতে উপন্যাস, গল্প, কবিতা, শিশু সাহিত্যের বইগুলোতে ধুলোর পাহাড় জমেছে। তবে ব্যতিক্রম দেখা গেল বহরমপুর শহরে। বহরমপুরের ব্যারাক স্কোয়ার ছোট্ট একটি লাইব্রেরি রাস্তার উপরেই অবস্থিত, পাশে চায়ের দোকান। জানা যায়, বহরমপুর শহরের চৌতারায় কয়েকজন শিক্ষা অনুরাগীদের উদ্যোগে চালু হওয়া এই অভিনব লাইব্রেরিতে মোট ৩০টি বই রয়েছে।
জীবনানন্দ দাস থেকে শুরু করে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, পথের পাঁচালী থেকে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা পল্লীসমাজ রাজা রামমোহন রায়, এপিজে আবুল কালাম সহ একাধিক লেখক লেখিকার বিভিন্ন পুস্তক নিয়ে বহরমপুর শহরে এই প্রথম শুরু হল ‘স্ট্রিট লাইব্রেরি’। রয়েছে শিশু পাঠ্যের বেশ কিছু বইও।
যেকোন লেখকের বই সারা দিন লাইব্রেরিতে বসে সাধারণ পাঠক বই পড়তে পারবেন। বই পড়ার জন্য কেনো পয়সা লাগবে না। বহরমপুর শহরের বাসিন্দা শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, খুব ভাল উদ্যোগ এই প্রথম এরকম সুযোগ। বইপ্রেমীদের জন্য সুখবর। শত প্রতিকূলতা থাকলেও মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুরে সাধারণ পাঠকদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে নেওয়া হল ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের শহরগুলিতে ‘স্ট্রিট লাইব্রেরি’ জনপ্রিয় হলেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এখনও তেমনভাবে নতুন ধরনের এই লাইব্রেরির ভাবনা জনপ্রিয় হয়নি।
সকাল থেকে সন্ধ্যা বহরমপুরের চৌতারায় হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা চলে। এখানেই বসে গল্প করেন প্রাতঃভ্রমণকারীরা। এখানেই জিরিয়ে নেন গ্রাম থেকে শহরে আসা মানুষ। সেই চৌতারায় এবার বই পড়ার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত বই প্রেমীরা। এই লাইব্রেরির অন্যতম উদ্যোক্তা অর্ধেন্দু বিশ্বাস পেশায় শিক্ষক। রাস্তার মোড়ে, আড্ডার জায়গায় তৈরি করছেন এই স্ট্রিট লাইব্রেরি। বহরমপুরের চৌতারায় এক টুকরো এই লাইব্রেরিতে রয়েছে ৩০ টি বই। এই লাইব্রেরি ২৪ ঘন্টায় খোলা থাকছে। শুক্রবার সকালেও লক্ষ্য করা যায় বইপ্রেমীদের ভিড়।