বৃহস্পতিবার, প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বৃহস্পতিবার তার ব্যক্তিগত কাজে আসানসোলে আসেন। তিনি আসানসোল সার্কিট হাউসে বেশ কিছুক্ষণ ছিলেন। সেখানে তাকে রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি সহ অন্য কংগ্রেসের নেতারা পুষ্পস্তবক দিয়ে সম্বর্ধনা জানান। পরে, সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় অধীর রঞ্জন চৌধুরী পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজের স্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি একসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলকে আক্রমণ করে বলেন, এখন ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে কে বড় হিন্দু তা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। একদিকে নরেন্দ্র মোদী রাম মন্দির উদ্বোধন করছেন, অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জগন্নাথ দেবের মন্দির ও প্রাণপ্রতিষ্ঠা করতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, এতদিন আমরা জানতাম যে ঈশ্বর হোক বা আল্লাহ হোক, তিনিই আমাদের জীবন দিয়েছেন।
কিন্তু আজ আমরা এমন দুই নেতা নেত্রী পেয়েছি যারা সর্বশক্তিমানের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করছেন। অধীর চৌধুরী কটাক্ষের সুরে বলেন, ২০২৬ সালের বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনগণকে বিভ্রান্ত করার এটি একটা কৌশল মাত্র। আগের নির্বাচনের আগে যেমন এনআরসি আনা হয়েছিলো। রাম মন্দিরের বিষয়টিও সামনে আনা হয়েছিলো। ঠিক একইভাবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগেও প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, এমন নয় যে বাংলার মানুষ আগে রাম নবমী দেখেনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে দুই দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে, যে রাম এবং হনুমান কার, তা নিয়ে। আসানসোল সহ সমগ্র রাজ্যে কারখানা এবং উন্নয়ন সম্পর্কে এই কংগ্রেস নেতা বলেন যে, আসানসোল শিল্পাঞ্চলে যা কিছু শিল্পায়ন হয়েছিল তা কংগ্রেস আমলে।
যা ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় করেছিলেন। কিন্তু তার পরে, বাংলায় যে সরকারই ক্ষমতায় ছিল, তারা শিল্পায়নের উপর তেমন জোর দেয়নি। যে কারণে আজ প্রতিভা বাংলা থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন যে প্রতি বছর তার আয়োজিত বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ বাংলায় আসে। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে তা কোথাও দেখা যায় না। কেবল মাত্র কাগজপত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়ে যায়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে, বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস বা বাংলার বর্তমান রাজ্য সরকার কেবল তিনটি কারণে টিকে আছে। একটি হলো দুর্নীতি। দ্বিতীয় হলো গুন্ডা ও পুলিশের যোগসাজশ ও তৃতীয় হলো সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং অনুদান। এর বাইরে তৃণমূল কংগ্রেসের আর কিছুই নেই বলে দাবি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর।