দেশে থাকা ‘ঘরশত্রু বিভীষণ’দের চিহ্নিত করতে শুরু করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই ‘গদ্দার’দের সহযোগিতাতে ভারতে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিকল্পনা করা অনেকটাই সহজ হয়েছিল জঙ্গিদের। অপারেশন সিঁদুরের পর গোয়েন্দাদের কাছে এই খবর আসে। এরপরই দেশে থাকা পাক গুপ্তচরদের খোঁজ করে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে শুধু ‘সুন্দরী’ ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রা একা নয়, এই তালিকায় রয়েছেন মোট ৮ জন। এঁদের মূলত তিনটি রাজ্য থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এঁদের মধ্যে চারজন হরিয়ানার, তিনজন পাঞ্জাবের ও বাকি একজন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এখনও পুলিশের নজরে রয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। চিনে নেওয়া যাক গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া এই আট পাক গুপ্তচরকে।
জ্যোতি মালহোত্রা
পেশায় ট্রাভেল ভ্লগার জ্যোতি অন্যতম পাক গুপ্তচর। দেশের আভ্যন্তরীন একাধিক তথ্য পাকিস্তানে পাচার করার অভিযোগে জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে আরও বেশ কয়েজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দিল্লিতে পাক হাই কমিশনের এক আধিকারিকের সঙ্গে জ্যোতির নিবিড় যোগাযোগ ছিল। তার মাধ্যেমেই পাক গুপ্তচর সংস্থা ISI-এর সঙ্গে যোগাযোগ হয় জ্যোতির। ভারতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গার গোপন তথ্য পাকিস্তানে পাচার করার অভিযোগ রয়েছে জ্যোতির বিরুদ্ধে।
দেবেন্দ্র সিং
২৫ বছর বয়সি দেবেন্দ্র সিং একজন কলেজ পড়ুয়া। ধিলন পাতায়ালার খালসা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন তিনি। বন্দুক হাতে ফেসবুকে ছবি আপলোড করার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে গত বছরের নভেম্বরে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন তিনি। এমনকী ISI-এর একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। ভারতীয় সেনার একাধিক গোপন তথ্য শেয়ার করার অভিযোগ রয়েছে দেবেন্দ্রর বিরুদ্ধে।
নওমান ইলাহি
হরিয়ানায় নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কর্মরত ২৪ বছরের এই যুবক পাক গুপ্তচর সংস্থাকে দেশের একাধিক গোপন তথ্য পাচার করত। পাকিস্তানের এক পাক হ্যান্ডেলারকে তথ্য পাচার করে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কয়েকদিন আগেই পানিপথ থেকে নওমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরমান
গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে গত ১৬ মে হরিয়ানা থেকে আরমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৩ বছরের এই কলেজ পড়ুয়া অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাক গুপ্তচরদের একাধিক গোপন তথ্য পাচার করেছিলেন বলে অভিযোগ।
শাহজাদ
উত্তরপ্রদেশের রামপুরের ব্যবসায়ী শাহজাদকে রবিবার মোরাদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে স্পেশাল টাক্স ফোর্স। জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক তথ্য পাক হ্যান্ডেলারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
মহম্মদ মুর্তাজা আলি
পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ রয়েছে মুর্তাজার বিরুদ্ধে। মোবাইলের মাধ্যমে একাধিক গোপন তথ্য পাচার করতেন তিনি। অভিযুক্তের কাছ থেকে চারটি স্মার্ট ফোন ও বেশকিছু সিম কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, পাঞ্জাব থেকে গাজালা ও ইয়ামিন মহম্মদ নামে আরও দু’জনকে পাক গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।