প্রবাদ আছে তাল পাকা গরম। ভাদ্র মাসে সেই গরম পড়ে। প্যাচপেচে ঘেমো গরম। তালের বড়ার ঋতু যেন। ভাদ্র আসতে আরও চার মাস। বাজারে তাল আসতে দেরি হলে কী হবে, তালশাঁস এসে গিয়েছে। এই গরমে পাল্লা দিচ্ছে ডাবের সঙ্গে।
কোচবিহার শহরজুড়ে তালশাঁসের বিক্রেতা অগুনতি। গুঞ্জবাড়ি মোড়, জেনকিন্স স্কুল মোড়, বাজার এলাকা, স্টেশন মোড়- যেখানেই যাবেন, রাস্তার ধারে তালশাঁস বিক্রির আয়োজন। জেনকিন্স স্কুলের মোড়ে তালশাঁস বিক্রেতা দুই তরুণ জানালেন, দিনে গড়ে ১০০-১২০টি তালশাঁস বিক্রি হচ্ছে। গরমে ডাবের চাহিদা থাকে নিঃসন্দেহে। কিন্তু সেই চাহিদাকে যেন টেক্কা দিচ্ছে তালশাঁস।
বাজারে ডাবের দাম যেখানে ন্যূনতম ৬০ টাকা, সেখানে তালশাঁস পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩০ টাকায়। তালশাঁস বিক্রেতা মুজিবর হক বলেন, ‘৬ বছর ধরে গরমে ডাব এবং তালশাঁস বিক্রি করি। দামের কারণে ডাব বিক্রি কিছুটা হলেও কম। তালশাঁস বিক্রি অনেক বেড়েছে।’ গুঞ্জবাড়ি মোড়ের তালশাঁস বিক্রেতা গোবিন্দ সরকার ডাব ও তালশাঁস দুই-ই বিক্রি করেন। তাঁর কথায়, ‘গরমে তালশাঁসের বেশি চাহিদা থাকে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যায়।’
গরমে আম, জাম, লিচুর সঙ্গে বিক্রিতে পাল্লা দিচ্ছে তালশাঁস। ইংরেজি নাম আইস অ্যাপল। শুধু তৃষ্ণা মেটায় না, স্বাদ ও পুষ্টির বিচারে জুড়ি মেলা ভার। কোচবিহারে কচি তাল আসে মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া থেকে। নিপুণ হাতে সেই কচি তালের থেকে শাঁস তুলে নেওয়ার অপেক্ষা শুধু।
অফিস থেকে বেরিয়ে অনেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে তালশাঁসে পিপাসা মেটান। তালশাঁস কিনে অজয় দাস বললেন, ‘গরমে চিকিৎসকরা তালশাঁস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তালশাঁস শরীর ঠান্ডা করে। স্বাদ এত মিষ্টি যে, বাড়ির যে বাচ্চারা ফল খেতে পছন্দ করে না, তারাও তালশাঁসের ভক্ত হয়ে যায়।’
সত্যিই গরমে তালশাঁসকে খাদ্যতালিকায় জুড়ে দেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসক বিশ্বপ্রিয় সিনহা বলেন, ‘তালশাঁসে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান থাকে। তাছাড়া রাসায়নিকমুক্ত। গরমে তালশাঁস খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ভালো।’