মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মতোই শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই ৩১ মে-র মধ্যেই জারি হল এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি। চাকরিহারাদের মধ্যে যাদের বয়সসীমা পেরিয়ে গিয়েছে তাদের বয়সের ছাড়ের কথাও জানানো হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তিতে। দিন কয়েক আগেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে চাকরিহারা সব শিক্ষক শিক্ষিকাদের নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসার আবেদন করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বাধ্য হয়েই তাদের নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হচ্ছে। সেইমতো আজ ৩০ মে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এসএসসি। এসএসসি-এর এই নয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে আগামী ১৬ জুন বিকেল পাঁচটা থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন চাকরিপ্রার্থীরা। এরই পাশাপাশি আগামী ১৪ জুলাই বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে। পরীক্ষার জন্য আবেদনের ফি নেওয়ার শেষ সময় হল আগামী ১৪ জুলাই রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট।
লিখিত পরীক্ষা আগামী সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে হতে পারে। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হতে পারে অক্টোবরের চতুর্থ সপ্তাহে। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর সহকারী শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করলে সাধারণ এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে ৫০০ টাকা। তফশিলি জাতি উপজাতি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে ২০০ টাকা। নতুন এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্ভাব্য সময় আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্যানেল প্রকাশিত হবে আগামী ২৪ নভেম্বর এবং কাউন্সিলিং শুরু আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে লিখিত পরীক্ষায় নম্বর বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬০। শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপরে থাকবে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। এক্ষেত্রে ২৫ নম্বর কমানো হয়েছে। যোগ হয়েছে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং লেকচারার ডেমোস্ট্রেশনের নম্বর। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার ওপর দেওয়া হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। লেকচারার ডেমোস্ট্রেশনের জন্য থাকছে ১০ নম্বর।
অর্থাৎ শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ও লেকচারার ডেমোনস্ট্রেশনের দক্ষতার জন্য মোট ২০ নম্বর অতিরিক্ত থাকছে। ইন্টারভিউয়ের জন্য আগের মতই ১০ নম্বর থাকছে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রেও। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সাধারণ পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সসীমা রাখা হয়েছে। তবে ওবিসি, এসসি, এসটি এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের বয়সের ক্ষেত্রে ছাড় হয়েছে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মতো ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্যানেলে থাকা চাকরিহারাদের মধ্যে যাদের পরীক্ষার বসার বয়স পেরিয়ে গিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বয়সের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী চাকরি হারানো প্রার্থীদের এই নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, রাজ্য সরকার রিভিউ পিটিশনের মাধ্যমে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে। যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন, সেই প্রার্থীরা নতুন করে পরীক্ষায় বসতে অনিচ্ছুক হলেও, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁদেরও এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁদের স্বার্থে সরকার লড়াই চালিয়ে যাবে।