জামাই চাই, জামাই? লাগবে নাকি, ফর্সা জামাই, কালো জামাই, মোটাসোটা জামাই? হ্যাঁ। এমন ভাবে হাঁক দিতে দিতে টহল দিচ্ছেন তিন যুবক। রবিবার জামাই ষষ্ঠীর দিনে শহরের হাটতলা বাসস্ট্যান্ডের পর নানা এলাকায় দিনভর ঘুরে বেড়ালেন তারা। দেখে চক্ষু চড়কগাছ সকলের। শুভজিৎ পাত্র, রোহন সাঁতরা, সোমনাথ পালিত, এই তিন যুবকের কান্ডকারখানা দেখে হাঁসিতে গড়িয়ে পড়েছেন গুসকরা শহরের মানুষজন। সাতসকালে পাঞ্জাবি পাজামা পড়ে, হাতে ছোট মাছ আর ছোট্ট দইয়ের ভাড় নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন তারা। মাথায় আবার শোলার মুকুট। এলাকায় এলাকায় গিয়ে তারা হাঁক দেন, জামাই নেবেন, জামাই? সঙ্গে আবার সেল! সেল! সেল!
বলে ক্রেতাদের ভারী ডিসকাউন্ট দেবার আশ্বাস। হবু শ্বাশুড়ি থেকে তরুণী সবার কাছে জামাই হিসেবে ভাড়া যাবার আবেদন-নিবেদন। ভাড়াটে জামাইরা জানান, দশ বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা করেও বিয়ের ফুল ফোটেনি। তাই লোকের মুখে হাঁসি ফোটাতেই এই ভাবনা আসে তাদের মাথায়। সাতসকালেই জামাইষষ্ঠীতে জামাই হিসাবে ভাড়া খাটতে রাস্তায় নামা এই তিন ব্যাচেলারকে দেখে অবাক গুসকরাবাসী। হাতে মাছ, দইয়ের ভাঁড় নিয়ে তারা বাসের কাছে বা বাজারে গিয়ে ভাড়া যাবার জন্য পীড়াপীড়ি করছেন। রাস্তায় তরুণী বা মধ্যবয়সী মহিলাদের দেখলেই বলছেন, জামাই লাগবে নাকি? রবিবার জামাইষষ্ঠীর দিন এমনই মজার কাণ্ডকারখানার সাক্ষী গুসকরাবাসী। তবে এত কান্ডেও চিঁড়ে ভেজে নি। একজন স্লাইট পছন্দ করেও মাঝপথে মাছের সাইজ পছন্দ না হওয়ায় রিজেক্ট করে দিয়েছেন।
তবে হাল ছাড়েননি তারা। চেষ্টা চালিয়ে যান। ভাড়া খাটার জন্য অপশন ছিলো নানারকম। যার যেমন পছন্দ। আছে ফর্সা, কালো, মোটা জামাই বেছে নেবার অপশন। তবে তাদের কোনো দাবি নেই। শুধু পেটভরে খেতে দিলেই তারা ভাড়া যাবেন। আর ডিসকাউন্ট? ইচ্ছুক শ্বাশুড়িদের আশ্বস্ত করে তারা জানাচ্ছেন, আটশো টাকা কেজি খাসির মাংস লাগবে না। পুঁটি মাছের ঝাল, নিরামিষ ভাতেও রাজি তারা। আর ডিম ভাত হলে তো কথাই নেই!