বুধবার ইসলামাবাদে বাজেট পরবর্তী সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। কিন্তু সরকারের আচরণে অসন্তোষ জানিয়ে সাংবাদিক বৈঠক বয়কট করেছেন সাংবাদিকেরা। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, ঔরঙ্গজ়েব কথা বলতে এলেই সাংবাদিকদের অধিকাংশ সভাস্থল থেকে বেরিয়ে যান। এর পরেও না থেমে কথা বলে চলেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর সামনে দু’এক জন সাংবাদিক বসেছিলেন মাত্র।
মঙ্গলবার ২০২৬ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করেছে পাকিস্তানের শাহবাজ় শরিফের সরকার। সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বুধবার সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন পাক অর্থমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে হাজির ছিলেন পাকিস্তানের ফেডেরাল বোর্ড অফ রেভিনিউ (এফবিআর)-এর চেয়ারম্যান রশিদ মাহমুদ লাংরিয়াল এবং অর্থসচিব ইমদাদুল্লা বোসাল। অভিযোগ, বাজেট পেশের পর মঙ্গলবারই সরকারের তরফে সাংবাদিকদের জন্য বিশদ এবং খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা (টেকনিক্যাল ব্রিফিং) করার কথা ছিল। তাতে বাজেটে প্রস্তাবিত ব্যবস্থাগুলির আইনি ব্যাখ্যাও থাকার কথা ছিল। কিন্তু এফবিআর তা দেয়নি। তার ফলেই সাংবাদিকেরা ক্ষুব্ধ হন। এর প্রতিবাদে তাঁরা বুধবারের সাংবাদিক বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকে পাকিস্তানের জাতীয় শুল্কনীতির সংস্কারগুলি ব্যাখ্যা করেছেন অর্থমন্ত্রী। জানিয়েছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে যে খাতে জনগণকে যতটা স্বস্তি দেওয়া সম্ভব, তা দেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা খাতে ২০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধির কথা বাজেটে ঘোষণা করেছে পাক সরকার। স্বাস্থ্য, পরিবেশ খাতে বরাদ্দ আগের চেয়ে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের (আইএমএফ) শর্তগুলিকে মাথায় রেখে এই বাজেট প্রস্তুত করেছে শাহবাজ় সরকার।
বাজেট ঘোষণার আগে সোমবার অর্থমন্ত্রী ঔরঙ্গজ়েব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ন’মাসের (পাকিস্তানের অর্থবর্ষ শুরু হয় জুলাই থেকে) পরিসংখ্যান তুলে ধরে তাতে বলা হয়েছিল, ইসলামাবাদের মাথায় ঋণের বোঝা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৩ লক্ষ কোটি টাকা (৭৬ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপি)। তবে এই রিপোর্ট প্রকাশ করে তিনি দাবি করেছিলেন, গত দু’বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। চলতি অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) পরিস্থিতির আরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর তার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছিল ভারত। ওই ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপও করা হয়েছে। গত ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে সেনা অভিযান চালায় ভারত, যার নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানও এর পর পাল্টা হামলা চালায়। দুই দেশের মধ্যে টানা চার দিন সংঘাত চলেছে। গত ১০ মে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। তবে দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা এখনও রয়েছে।