আসানসোলে পাখি ব্যবসায়ীর বাড়িতে বন দপ্তরের আধিকারিকদের হানা। ওয়াইল্ড লাইফ ব্যুরোর তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার বনদপ্তরের আধিকারিকরা যৌথভাবে আসানসোল দক্ষিণ থানার বুধায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেন বলে জানা গেছে। গোপন সূত্রে বন দপ্তরের কাছে খবর ছিলো, এই এলাকায় সৈকত হাজরা নামে এক যুবক থাকেন। তিনি সরকারি অনুমোদন নিয়ে মংক পার্কিট বা বিশেষ ধরনের রঙিন পাখির ব্রিডিং করে ব্যবসা করেন। সেখানেই সরকারের অনুমতি ছাড়াই তিনি মিউট সোয়ান বা ভিন্ন প্রজাতির রাজহাঁস রেখেছেন বিক্রির জন্য। পশ্চিম বর্ধমান জেলার এডিএফও সারোদা সাহার নেতৃত্বে বন দপ্তরের আধিকারিকরা বুধবার ঐ পাখি ব্যবসায়ীর বাড়িতে হাজির হন। তারা সেখানে তারা আটটি মিউট সোয়ান বা রাজহাঁস দেখতে পান। তার কাগজপত্র দেখতে চাইলে সঠিক কেন কিছু ব্যবসায়ী দেখাতে পারেননি। এরপর সেখান থেকে আটটি রাজহাঁস উদ্ধার করে আনা হয় রেঞ্জ অফিসে।
একই সঙ্গে ঐ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান ডিএফও অনুপম খান। তিনি বলেন, এই প্রজাতির রাজহাঁস বাড়িতে রাখতে গেলে সরকারের অনুমতি লাগে। এদিনই তাকে গ্রেফতার করে আসানসোল আদালতে পাঠানো হয়। আসানসোল আদালতের সরকারি আইনজীবী বা পিপি মনোজ প্রসাদ বলেন, ধৃতর বিরুদ্ধে বন্য জন্তু সংরক্ষণ ১৯৭২ এর আইন সহ সংশোধনী আইনের ৩৯, ৪৪, ৪৯ বি, ৫১ নং ধারায় মামলা দায়ের করেছে বন দপ্তর। বিচারক তার জামিন নাকচ করে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে। ডিএফও বলেন, উদ্ধার করা হাঁসগুলিকে বর্ধমান চিড়িয়াখানায় পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গতঃ ধৃত সৈকত হাজরা নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল আছে। যেখানে কিভাবে তিনি বিশেষ ধরনের ছোট ছোট সুন্দর পাখিদের জন্ম দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন, তা লোড করেছেন। তা দেখে ইতিমধ্যেই দুর্গাপুর সহ একাধিক জায়গা থেকে অনেকেই এসে সেই পাখি কিনেছেন। ইউটিউবে দেখা যাচ্ছে, তারা বলছেন এই ধরনের কাজকর্ম সাধারণত সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় হয়ে থাকে। আসানসোলে এটা হচ্ছে দেখে তারা খুশি। জানা গেছে, সৈকত অবশ্য বন দপ্তরের আধিকারিকদের বলেছেন তিনি জানতেন না এই ধরনের মিউট সোয়ান রাখতে গেলে সরকারি অনুমতি দরকার। এই প্রসঙ্গে বন দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, হায়দ্রাবাদ থেকে এই মিউট সোয়ানগুলি সৈকত হাজরা গত ২৪ মার্চ এনেছিলেন। তার সেগুলো বিক্রির উদ্দেশ্য ছিলো বলে বন দপ্তরের আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন। তবে রাজহাঁসগুলোকে তিনি এই রাজ্যের কোথায় বা ভিন রাজ্যে বিক্রি করবেন বলে ঠিক করেছিলেন, তা অবশ্য তিনি জানাননি বন দপ্তরের আধিকারিকদের।