রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ঝাড়গ্রাম এবার আরও সহজে হাতের মুঠোয়। পর্যটকদের সুবিধার জন্য বড়সড় উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। ঝাড়গ্রামের পর্যটন পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজাতে ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৭ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রাস্তা তৈরি করা হবে।ঝাড়গ্রাম জেলার জেলাশাসক সুনীল কুমার আগরওয়াল জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে, যার ফলে জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্থলের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য ঝাড়গ্রাম বরাবরই পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য। ঘন জঙ্গল, পাহাড়, ঝরনা, বন্যপ্রাণ—সব মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয় এই জেলা। তবে দীর্ঘদিন ধরেই পর্যটন কেন্দ্রগুলির সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ দুর্বল ছিল। বাম আমলে পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে পরিচিত ঝাড়গ্রামের পরিকাঠামো উন্নয়নের অভাব এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা পর্যটনে প্রভাব ফেলেছিল। তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর জেলায় শান্তিশৃঙ্খলা ফিরেছে, পর্যটনের প্রসারেও নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ। সেই ধারাবাহিকতায় এবার বড় আকারে রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এই প্রকল্পের আওতায় যে সব রাস্তা নির্মাণ হবে, তার মধ্যে রয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর-২ ব্লকের চাকাডোবা থেকে কাঁকড়াঝোড় পর্যন্ত ১৫ কিমি রাস্তা। বেলপাহাড়ী, লালজল, ঘাগরা, ঝরনা ঘেরা এই অঞ্চল পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের কেন্দুয়াবান্ধী থেকে ঝিল্লি পাখিরালয় পর্যন্ত ৭ কিমি রাস্তা। জেলার পর্যটন মানচিত্রে ঝিল্লি এখন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে পাখিপ্রেমীদের কাছে।নয়াগ্রাম ব্লকের ঝরিয়াচক থেকে ধানশোল ও খড়িকামাথানি পর্যন্ত ১৩ কিমি রাস্তা। এই জঙ্গল এলাকায় হরিণ দেখার জন্য ভিড় করেন বহু পর্যটক।
গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের রামকৃষ্ণপুর থেকে দুধিয়াশোল পর্যন্ত ৫ কিমি রাস্তা এবং ধিরোল বালিগেড়িয়া থেকে ঝুরিয়াশোল পর্যন্ত ৭ কিমি রাস্তা। সাঁকরাইল ব্লকের জঙ্গলকুড়চি থেকে মুড়াকাটি পর্যন্ত ১৯ কিমি রাস্তা, যা জঙ্গল ঘেরা বিস্তীর্ণ অঞ্চলের সঙ্গে সহজ যোগাযোগ তৈরি করবে। ঝাড়গ্রাম জেলার
জেলাশাসক সুনীল কুমার আগরওয়াল জানিয়েছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঝাড়গ্রাম স্টেশন থেকে বাস বা গাড়িতে করে পর্যটকরা সহজেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে পৌঁছে যেতে পারবেন। পর্যটন শিল্পকে ঘিরে এমন বৃহৎ প্রকল্পে ঝাড়গ্রাম জেলার বাসিন্দারা যেমন খুশি, তেমনই এই উদ্যোগে নতুন কর্মসংস্থানেরও সম্ভাবনা রয়েছে বলে ও জানা গিয়েছে।