ঝন্টু আলির পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পরিবারকে সহায়তার কথা জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ। আমি স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবার থেকে এসেছি। পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় দোষীরা উপযুক্ত জবাব পাবে।” এভাবেই জঙ্গিদের গুলিতে শহীদ তেহট্টর প্যারা কমান্ডো ঝন্টু আলি শেখকে শ্রদ্ধা জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নিহত সেনা কামান্ডোকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন শুভেন্দু। এদিন শুভেন্দু অধিকারী তেহট্টে নিহত ঝন্টুর আলি শেখের বাড়িতে পৌঁছে তাঁর আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান। সঙ্গে তাঁদের হাতে তুলে দেন আর্থিক সাহায্য। ঝন্টুর স্ত্রী এবং তাঁদের দুই সন্তানের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন শুভেন্দু। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এমন শাস্তি দেওয়া হবে, যা তাদের কল্পনারও বাইরে। কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে এভাবেই ধর্ম জেনে, ঠাণ্ডা মাথায়, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর্যটকদের খুন করে জঙ্গিরা! তারপর নির্লিপ্তভাবে মহিলাদের বলে, যান মোদিকে গিয়ে বলুন! ভারতের বুকে জঙ্গি হানা নতুন না হলেও, পহেলগাঁওয়ে যা হয়েছে তা নজিরবিহীন! গত শনিবার দাদার কাঁধে চেপে বাড়ি ফিরেছেন কফিনবন্দি ঝন্টু আলি শেখ।
দাদা রফিকুল শেখও সেনাবাহিনীতে আছেন। রফিকুল আর্টিলারি রেজিমেন্টের সুবেদার। একবছর হয় তাঁরও পোস্টিং কাশ্মীরে। ঝন্টু সেনাবাহিনীতে রয়েছেন ১৪ বছর ধরে। তাঁর দাদা রফিকুল সেনাবাহিনীতে আছেন ২৮ বছর। দেশকে বাঁচাতে ভাইয়ের আত্মত্যাগে গর্বিত দাদা। সেখান থেকে ব্যারাকপুরে এনে আজ ভোর ৫টা নাগাদ গার্ড অফ অনার দেওয়া হয় কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত সেনার স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো ঝন্টু আলি শেখকে। দেহ নিয়ে যাওয়া হয় নদিয়ার তেহট্টের বাড়িতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে সেনার স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো নিহত ঝন্টু আলি শেখের স্ত্রী বলেন, “আমরাও মুসলিম।
কিন্তু ওদের মনে বিদ্বেষ। ওরা মুসলিম নয়। আমার স্বামীও পছন্দ করত না। বলত, ধর্ম এক হলেও ওদের সঙ্গে আমাদের কোনও মিল নেই।” এদিকে, এতদিন পর ঝন্টুর বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারী পৌঁছতেই তাঁকে নিয়ে কটাক্ষের সুরে নদিয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা তৃণমূলের প্রবীণ নেতা বাণী রায় বলেন, “যাক, দেরিতে হলেও ওঁদের বিলম্বিত বোধোদয় হয়েছে। বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি বিধায়করা যদি ওঁদের বাড়ি গিয়ে এই মানবতার কথা শিখে আসতে পারেন, তা হলে ওঁদেরই মঙ্গল।” তবে তৃণমূল নেতার এহেন মন্তব্য নিয়ে পালটা ব্যঙ্গাত্মক সুরে শুভেন্দুর সফরসঙ্গী এক বিজেপি নেতা বলেন, “আমরা কোন নিহত সেনা জওয়ানের বাড়িতে কবে যাব, তার কৈফিয়ত আমরা তৃণমূল, কংগ্রেস বা সিপিএমকে দেব না। মুর্শিদাবাদে যেসব মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন, তাঁদের দিকে নজর দিন।”