স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের পর আশা ছিল কাটবে অচলাবস্থা। কিন্তু প্রথা ভেঙে সমাবর্তনের সময় পরিবর্তনের আর্জি জানিয়ে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে আচার্য সিভি আনন্দ বোস। ২৪ ডিসেম্বরের বার্ষিক সমাবর্তন সকাল ১০টার বদলে দুপুর ৩টেয় শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছে রাজভবন। আর এই ‘অবাস্তব’ দাবিতেই এখন মাথায় হাত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। চার হাজার পড়ুয়ার শংসাপত্র বিলি করতে যেখানে সকাল থেকে রাত হয়ে যায়, সেখানে বিকেলে অনুষ্ঠান শুরু হলে তা শেষ হতে মাঝরাত গড়াবে।
এতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পড়ুয়া ও ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর উদ্বেগ । প্রতি বছর ২৪ ডিসেম্বর প্রথা মেনে সকালেই শুরু হয় যাদবপুরের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এবারও সূচি মেনেই আমন্ত্রণপত্র বিলি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ রাজভবনের বার্তায় সব ওলটপালট হওয়ার জোগাড়। আচার্য জানিয়েছেন, তিনি সকালে থাকতে পারবেন না।
তাই বিকেলে কোর্ট মিটিং সেরে সাড়ে ৩টে থেকে অনুষ্ঠান শুরু করতে চান তিনি। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, কোর্ট মিটিং ছাড়া ডিগ্রি প্রদান সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজভবনকে ২১ বা ২২ ডিসেম্বর মিটিং করার অনুরোধ জানালেও আচার্য নিজের অবস্থানে অনড়। প্রশাসনের অন্দরে এখন ত্রাহি ত্রাহি রব। আধিকারিকদের মতে, বিকেলের সূচি মেনে চললে সমাবর্তন কার্যত প্রহসনে পরিণত হবে। হাজার হাজার পড়ুয়া, যাঁদের অনেকেই ভিন রাজ্যের, তাঁরা মাঝরাতে ফিরবেন কোথায়? বিশেষ করে মহিলা পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত শিক্ষক মহল।
গত দু’বছর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যদের সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সমাবর্তনে নাটক দেখেছিল শিক্ষা জগৎ। এবার স্থায়ী উপাচার্য থাকার পরেও কেন এমন ‘কৃত্রিম সংকট’ তৈরি করা হচ্ছে, তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রবীণ শিক্ষকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজভবনের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয়। আচার্য নিজে না আসতে পারলে উপাচার্যকে কোর্ট মিটিং ও মূল অনুষ্ঠান এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত রাজভবন থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি। শেষ পর্যন্ত প্রথা বজায় থাকবে নাকি মাঝরাত অবধি চলবে উৎসব, সেই দোলাচলেই এখন দিন কাটছে যাদবপুর ক্যাম্পাসের।














